মোঃ হায়দার হোসেন: সিলেটে জামায়াতে ইসলামীর গোপন আস্তানা থেকে নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সংঘটিত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এই গোপন আস্তানাগুলো থেকে চাঁদাবাজি, মাদক পাচার, অবৈধ অস্ত্রের ব্যবসা এবং অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে। তবে, এই বিষয়ে প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় জামায়াতে ইসলামীর গোপন আস্তানা রয়েছে, যেগুলো থেকে নিয়মিত অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালানো হচ্ছে। এই আস্তানাগুলোতে জামায়াতের নেতা-কর্মীরা তাদের অপকর্মের পরিকল্পনা করে এবং সেগুলো বাস্তবায়ন করে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এই আস্তানাগুলো অপরাধের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
আম্বরখানা এলাকার শামীম আহমেদ বলেন, “এই গোপন আস্তানাগুলো থেকে চাঁদাবাজি, মাদক পাচার এবং অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালানো হচ্ছে। আমরা বারবার পুলিশকে জানিয়েছি, কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।” আরেকজন বাসিন্দা বলেন, “এই আস্তানাগুলো অপরাধীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে। আমরা ভয়ে আছি, কারণ কেউ আমাদের পাশে নেই।”
অভিযোগ রয়েছে যে পুলিশ প্রশাসন এই বিষয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। স্থানীয়রা বলছেন, পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা এই অপরাধীদের আরও উৎসাহিত করছে। তারা প্রশাসনের কাছ থেকে দ্রুত হস্তক্ষেপ ও ন্যায়বিচার চেয়েছেন। এক ব্যবসায়ী বলেন, “পুলিশ যদি একটু সক্রিয় হতো, তাহলে পরিস্থিতি এতটা খারাপ হতো না। আমরা অসহায় বোধ করছি।”
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা কাউন্সিলর আজাদের সাথে কথা বললে তিনি জানান, এই ধরনের ঘটনা রাজনৈতিক সংঘাত ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের মধ্যে জটিল সম্পর্কের ইঙ্গিত দেয়। তিনি মনে করেন, রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা থাকায় অপরাধীরা আইনের ফাঁক গলে বেরিয়ে যাচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে এবং এলাকায় অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে।
সিলেটের এই পরিস্থিতি নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। অনেকেই বলছেন, প্রশাসন যদি সময়মতো ব্যবস্থা নিত, তাহলে পরিস্থিতি এতটা খারাপ হতো না। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এই বিষয়ে তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে, পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা অভিযোগ পেয়েছে এবং বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। তবে, স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, শুধু তদন্তে সময় নষ্ট না করে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। তারা চান, অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক এবং এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনা হোক।
এই ঘটনায় সিলেটের সাধারণ মানুষ উদ্বিগ্ন। তারা চান, যেন তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয় এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। স্থানীয়রা আশা করছেন, সরকার ও প্রশাসন এই বিষয়ে দ্রুত হস্তক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনবে।
উল্লেখ্য, সিলেটের এই ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। অনেকেই পুলিশ প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার সমালোচনা করছেন এবং দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন।
এই ধরনের ঘটনা শান্তিপূর্ণ সমাজ বজায় রাখার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। স্থানীয় প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর উচিত এই বিষয়ে তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া। এ ধরনের ঘটনার দ্রুত সমাধান অপরিহার্য, যাতে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হতে পারে এবং এলাকায় শান্তি ফিরে আসে।