মোছা: ফাতেমা বেগম: সিলেটে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) নেতা সোহেল আহমেদের নেতৃত্বে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্যকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনার পর সিলেটে তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক সমাজে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযোগ পাওয়া গেছে, বিএনপি নেতা সোহেল আহমেদের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী গতকাল শাবিপ্রবির উপাচার্য প্রফেসর ড. মেসবাহ উদ্দিন আহমেদকে মারধর করেছেন। উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে অবস্থান করছিলেন, তখন তার অফিসে এই হামলা চালানো হয়। সন্ত্রাসীরা উপাচার্যকে ধাক্কা দিয়ে অফিসে প্রবেশ করে তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। ঘটনার পর শাবিপ্রবির ছাত্রীরা তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে স্লোগান দিতে শুরু করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়।
উপাচার্য প্রফেসর মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ হামলার শিকার হওয়ার পর এক বিবৃতিতে জানান, “এই ধরনের সহিংসতা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমি প্রশাসনিক কাজে ব্যস্ত থাকাকালে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এ ধরনের হামলা চালানো হয়েছে। আমি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানাচ্ছি।
এই হামলার ঘটনায় বিএনপি নেতা সোহেল আহমেদের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং ছাত্রদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ করা হচ্ছে, সোহেল আহমেদ এবং তার অনুসারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ছিল এবং তাদের উদ্দেশ্য ছিল উপাচার্যকে হেনস্থা করা। যদিও সোহেল আহমেদ নিজে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন, তবে তার নেতৃত্বে সংঘটিত এই সহিংস ঘটনা রাজনৈতিক অস্থিরতার সৃষ্টি করেছে।
একটি সূত্র জানায়, “এই ধরনের সহিংসতার পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে, যেখানে সরকারের বিরোধিতা করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে টার্গেট করা হয়েছে।
শাবিপ্রবির ছাত্ররা এই হামলার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন এবং হামলাকারীদের শাস্তি দাবি করেছেন। ছাত্র ইউনিয়নের নেতারা বলেন, “বিএনপি নেতা সোহেল আহমেদ এবং তার সন্ত্রাসী দল আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আক্রমণ করেছে। আমরা এর কঠোর প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি।
শিক্ষকরা জানাচ্ছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশে রাজনৈতিক সহিংসতা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। এই ধরনের ঘটনা শিক্ষার পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
এই ঘটনার পর সিলেট জেলা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে এবং হামলাকারীদের শনাক্ত করতে তদন্ত শুরু করেছে। সিলেট মহানগর পুলিশের কমিশনার জানান, “বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে মারধরের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে। যারা এই হামলার সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এছাড়া সিলেট জেলা প্রশাসনও এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে বিএনপি নেতা সোহেল আহমেদের নেতৃত্বে মারধরের ঘটনায় সিলেটে রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এবং ছাত্র-শিক্ষক সমাজ এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। সরকার এবং পুলিশ প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও, এই ধরনের সহিংসতা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অস্থিরতা ও আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে প্রতিনিয়ত ।