আব্দুল্লাহ মোঃ তাহের: পুলিশের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের তদন্ত পুলিশ বাহিনীর নিজেদের দ্বারা পরিচালিত হওয়া নিয়ে সমাজে ব্যাপক বিতর্ক ও প্রশ্ন উঠেছে। এই পদ্ধতির মাধ্যমে তদন্তের নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতা নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে গভীর সংশয় তৈরি হয়েছে। পুলিশ, যারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত, তাদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ যদি তাদেরই দ্বারা তদন্ত হয়, তাহলে তদন্তের ফলাফল কতটা বিশ্বাসযোগ্য হবে? এই প্রশ্নটি বারবার সামনে আসছে। অনেকের মতে, এই ধরনের তদন্ত পদ্ধতি শুধু তদন্তের গুণগত মানকেই প্রশ্নের মুখে ফেলে না, বরং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পথেও বাধা সৃষ্টি করে।
একটি বড় সমস্যা হলো, পুলিশের সদস্যরা যখন নিজেদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্ত করেন, তখন প্রভাবশালী ব্যক্তিরা তাদের অবস্থান ব্যবহার করে তদন্তকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করতে পারেন। এর ফলে অভিযোগের সত্যতা যাচাই করা কঠিন হয়ে পড়ে এবং অনেক ক্ষেত্রে তদন্তের নামে শুধু কাগজে-কলমে প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। ভুক্তভোগীরা প্রায়শই ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হন এবং তাদের অভিযোগ উপেক্ষিত হয়। এই ধরনের ঘটনাগুলো পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা কমিয়ে দেয় এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে।
এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য বিশেষজ্ঞরা একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত ব্যবস্থা গড়ে তোলার পরামর্শ দিয়েছেন। পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্তের জন্য একটি স্বাধীন কমিশন বা সংস্থা গঠন করা যেতে পারে, যেখানে পুলিশের প্রভাবমুক্ত হয়ে তদন্ত পরিচালনা করা সম্ভব হবে। এই ধরনের ব্যবস্থা শুধু তদন্তের বিশ্বাসযোগ্যতাই বাড়াবে না, বরং পুলিশ বাহিনীর জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে।
সরকার ও প্রশাসনের উচিত এই বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে একটি স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত ব্যবস্থা চালু করা। এতে করে পুলিশের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত সম্ভব হবে এবং ভুক্তভোগীরা ন্যায়বিচার পাবেন। পাশাপাশি, পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি ও জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হবে। একটি স্বাধীন তদন্ত ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জন্যই নয়, সমগ্র সমাজের জন্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।