মিথ্যা মামলা বাণিজ্য: কবে থামবে এই হয়রানি

ক্রাইম; দর্পন; ক্রাইম দর্পন; crime; crimedorpon; crimedarpan; dorpon; darpan; The Weekly Crime Dorpon; the weekly crime darpan; crimedorpon.com;

আব্দুল্লাহ মোঃ তাহের: পুলিশ কর্তৃক মিথ্যা মামলা বাণিজ্য ও অযথা নিরপরাধ মানুষকে হয়রানির অভিযোগ আমাদের দেশে একটি গভীর ক্ষতের নাম। এটি শুধু আইনের শাসনকে দুর্বলই করে না, বরং সাধারণ মানুষের মনে পুলিশের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাসকেও ধ্বংস করে দিচ্ছে। প্রতিনিয়ত আমরা শুনি, ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব, প্রতিশোধ বা আর্থিক সুবিধার জন্য মিথ্যা মামলা দায়ের করা হচ্ছে। আর এসব মামলায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। কবে থামবে এই হয়রানি? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে আমাদের সমস্যার গভীরে যেতে হবে।

প্রথমত, মিথ্যা মামলা বাণিজ্যের মূল কারণ হলো দুর্বল তদন্ত ও জবাবদিহিতার অভাব। অনেক ক্ষেত্রে পুলিশ অভিযোগ দায়ের করার আগে সঠিকভাবে তদন্ত করে না। ফলে, সহজেই কেউ অপরাধী বানিয়ে দেওয়া হয়। দ্বিতীয়ত, ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতি এই সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তোলে। কিছু অসাধু ব্যক্তি তাদের ক্ষমতা ব্যবহার করে নির্দোষ মানুষকে হয়রানি করে। এ ছাড়া, মামলা দায়েরের প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার অভাবও একটি বড় সমস্যা।

এই সমস্যা সমাধানের জন্য প্রথমেই প্রয়োজন পুলিশ বাহিনীতে জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। অভ্যন্তরীণ তদন্ত ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে হবে, যাতে কোনো অভিযোগ উঠলেই তা দ্রুত ও নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করা যায়। এ ছাড়া, মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে কঠোর নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারি জরুরি। প্রতিটি মামলা দায়েরের আগে প্রাথমিক তদন্ত বাধ্যতামূলক করা উচিত। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করতে হবে, নয়তো এই হয়রানি ও অবিচারের চক্র কখনো থামবে না।

সরকার, সুশীল সমাজ ও সাধারণ মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই পারে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হলে মিথ্যা মামলা বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে। পুলিশের ভূমিকা হতে হবে সৎ, স্বচ্ছ ও জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ। শুধু তখনই এই হয়রানির অবসান হবে এবং সাধারণ মানুষ ন্যায়বিচার পাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *