আব্দুল্লাহ মোঃ তাহের: সিলেটের একটি ব্যস্ত এলাকায় তল্লাশির নামে ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। গতকাল সন্ধ্যায় রিকাবি বাজার এলাকায় এই ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশের একটি টিম একটি বাসা তল্লাশি করার নামে বাসিন্দাদের কাছ থেকে নগদ অর্থ ও মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়। এই ঘটনায় এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং দ্রুত তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
ঘটনার বিবরণ অনুযায়ী, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি দল রিকাবিবাজারের একটি বাসায় অভিযান চালায়। তারা দাবি করে, সেখানে অবৈধ মাদক ও অস্ত্র রাখা হয়েছে। তবে বাসিন্দারা জানান, পুলিশ কোনো ধরনের আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করেনি এবং তল্লাশি শেষে তাদের কাছ থেকে প্রায় ২ লক্ষ টাকা নগদ অর্থ, গয়না ও মোবাইল ফোন জবরদখল করে নেয়। বাসিন্দা রহিমা আক্তার বলেন, “তারা আমাদের ঘরে ঢুকে সবকিছু উল্টেপাল্টে দেয় এবং আমাদের টাকা-পয়সা ও গয়না নিয়ে চলে যায়। তারা কোনো ধরনের রসিদ বা প্রমাণ দেয়নি।”
এই ঘটনায় স্থানীয়রা পুলিশের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করেছেন। তারা দাবি করেছেন, পুলিশের এই ধরনের কর্মকাণ্ড আইনের শাসনকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। স্থানীয় যুব নেতা সোহেল রানা বলেন, “পুলিশের কাজ জনগণের সুরক্ষা দেওয়া, কিন্তু তারা যদি নিজেরাই আইন ভাঙে, তাহলে আমরা কাদের কাছে যাব?”
পুলিশ কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগের বিষয়ে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় বলেছে, তারা বিষয়টি তদন্ত করবে। কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, “আমরা অভিযোগ পেয়েছি এবং বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে তদন্ত শুরু করেছি। যদি কোনো পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে দোষ প্রমাণিত হয়, তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এই ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। নেটিজেনরা পুলিশের এই ধরনের কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছেন এবং দ্রুত ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন। মানবাধিকার সংগঠনগুলোও এই বিষয়ে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।
এদিকে, এই ঘটনা পুলিশের ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। অনেকেই বলছেন, পুলিশের একটি ক্ষুদ্র অংশের এমন কর্মকাণ্ড পুরো বাহিনীর সুনাম নষ্ট করছে। এই ধরনের ঘটনা রোধ করতে পুলিশ বাহিনীর অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা ও জবাবদিহিতা জোরদার করার প্রয়োজনীয়তা উঠে এসেছে।
এই এলাকার জনগণ এখন ন্যায়বিচারের অপেক্ষায় রয়েছেন। তারা চান, এই ঘটনার দায়িত্ব যারা রয়েছেন, তাদের দ্রুত শনাক্ত করে কঠোর শাস্তি দেওয়া হোক। এই ঘটনা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর জনগণের আস্থা ফিরে পেতে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে।